এক নজরে শসা চাষ
উন্নত জাতঃ ডেডি ২২৩১ এফ-১, তিতুমীর এফ-১, গ্রীন কিং, শীলা, বারমাসী, ডেসটিনি, বুলবুল এফ-১ ইত্যাদি তীব্র শীতব্যাতীত সারাবছর চাষ উপযোগী
পুষ্টিগুনঃ প্রতি ১০০ গ্রাম শসাতে ৯৪.৯ গ্রাম জলীয় অংশ এবং ৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি রয়েছে । তাছাড়া নানাবিধ পুষ্টি উপাদান যেমন, চর্বি-০.১ গ্রাম , খনিজ পদার্থ- ০.৪ গ্রাম, আঁশ- ০.৪ গ্রাম , খাদ্যশক্তি- ২২ কিলোক্যালরি, আমিষ- ১.৬ গ্রাম, ক্যালসিয়াম- ১৪ মিলিগ্রাম, আয়রন- ১.৫ মিলিগ্রাম , অল্প ক্যারোটিন,ভিটামিন বি--১০.১৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-২- ০.০২ মিলিগ্রাম ও শর্করা - ৩.৫ গ্রাম ইত্যাদি বিদ্যমান ।
বপনের সময়ঃ জাতভেদে ফেব্রুয়ারী-মার্চ (মধ্য মাঘ-মধ্য ফাল্গুন) উপযুক্ত সময় ।
চাষপদ্ধতি: মাটির প্রকার ভেদে ৪-৬ টি চাষ ও মই দিতে হবে । প্রথম চাষ গভীর হওয়া দরকার । বেড ও নালা পদ্ধতিতে চাষ করুন। এতে সেচ ও নিষ্কাশন সুবিধাজনক, পরিচর্যা সহজ এবং সেচের পানির অপচয় কম হয় । সার শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। সরাসরি বীজ বুনলে লাইন থেকে লাইন ৬০ ইঞ্চি এবং চারা থেকে চারা ৬০ ইঞ্চি দূরে লাগাতে হবে ।
বীজের পরিমানঃ জাত ভেদে শতক প্রতি ১.৫-৪ গ্রাম।
সার ব্যাবস্থাপনাঃ
সারের নাম | হেক্টর প্রতি সার | শতক প্রতি সার |
পঁচা গোবর | ৫ টন | ২০ কেজি |
ইউরিয়া | ৮০ কেজি | ৩২০ গ্রাম |
টি এস পি | ১০০ কেজি | ৪০০ গ্রাম |
এম ও পি | ৫০ কেজি | ২০০ গ্রাম |
জিপসাম | ৫০ কেজি | ২০০ গ্রাম |
দস্তা | ১২ কেজি | ৪৮ গ্রাম |
বোরন | ১০ কেজি | ৪০ গ্রাম |
৫০০০ কেজি গোবর, ১০০ কেজি টিএসপি , ৫০ কেজি এমওপি, ৫০ কেজি জিপসাম, ১২ কেজি দস্তা, ১০ কেজি বোরণ জমি তৈরির সময় মাটিতে প্রয়োগ করুন। অবশিষ্ট গোবর (৫০০০ কেজি), টিএসপি (১০০ কেজি), ইউরিয়া (৮০ কেজি), পটাশ (৫০কেজি) চারা রোপণের ৫-৬ দিন পূর্বে মাদায় প্রয়োগ করুন। চারা রোপণের ১০-১৫ দিন পর ১ম বার ,ফুল আসার পর ২য় বার এবং ফল ধরার সময় ৪০ কেজি ইউরিয়া প্রয়োগ করুন। মাটির ধরন ধরণ সারের মাত্রা কম বেশি করুন।মাদায় চারা রোপণের পূর্বে সার দেয়ার পর পানি দিয়ে মাদার মাটি ভালভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে। অতঃপর মাটিতে জো এলে ৭-১০ দিন পর চারা রোপণ করতে হবে।
সেচঃ মাটিতে রস কম থাকলে বপনের ৭-১০ দিনের মধ্যেই একটি সেচ দিন। সাধারণত ২ সপ্তাহ পর পর ২-৩ বার সেচ দিন।জমিতে রসের অভাব থাকলে সেচ দিতে হবে। পুরো জীবন কালে মাটিতে রসের মাত্রা ৫০% এর নিচে নেমে যাবার আগে ( পূর্ণ বয়সী শিকড় ৫০ সেমি) সেচ দিন ।
আগাছাঃ আগাছা দমনের জন্য জমি চাষ ও মই দিয়ে ভালোভাবে আগাছা পরিষ্কার, বিশুদ্ধ বীজ ব্যবহার এবং পরিষ্কার কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার। সেচ ও সার দেবার পর জো আসা মাত্র আগাছা দমন করুন ।চারা গজানোর ২০-২৫ দিন পর আগাছা দমন করতে হবে। গাছ খুব ঘন থাকলে পাতলা করে দিতে হবে। প্রতি বর্গমিটারে রবি মৌসুমে ৫০-৬০ টি এবং খরিফ মৌসুমে ৪০-৫০ টি চারা রাখা উত্তম।
আবহাওয়া ও দুর্যোগঃ অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি বের করার নালা রাখুন। জমির অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি বের করা ব্যবস্থা রাখুন।
পোকামাকড়ঃ
রোগবালাইঃ
সতর্কতাঃ বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যবহারের আগে বোতল বা প্যাকেটের গায়ের লেবেল ভালো করে পড়ুন এবং নির্দেশাবলি মেনে চলুন। ব্যবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুন। ব্যবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবেনা। বালাইনাশক ছিটানো জমির পানি যাতে মুক্ত জলাশয়ে না মেশে তা লক্ষ্য রাখুন। বালাইনাশক প্রয়োগ করা জমির ফসল কমপক্ষে সাত থেকে ১৫দিন পর বাজারজাত করুন।
ফলনঃ জাতভেদে শতক প্রতি ফলন ১০০-৩০০ কেজি।
সংরক্ষনঃ ঝুড়িতে ভরে পাতলা চট দিয়ে ঢেকে কিনারা সেলাই করে শীতল জায়গায় সংরক্ষণ করতে হবে। বেশি দিন সংরক্ষণ এর জন্য হিমাগারে রাখতে হবে।