এক নজরে টমাটো চাষ
পুষ্টিগুনঃ টমেটোর পুষ্টিগুন নানাবিধ যেমন খনিজ পদার্থ, আঁশ, খাদ্যশক্তি, আমিষ, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ক্যারোটিন,ভিটামিন বি-১, ভিটামিন বি-২ ও শর্করা ইত্যাদি।
উন্নত জাতঃ বাহার, বিনা টমেটো – ২, বিনা টমেটো – ৩ ইত্যাদি গ্রীষ্ণকালীন, বিনা টমেটো- ৮, বিনা টমেটো- ৯, বিনা টমেটো- ১০, বারি টমেটো – ১, বারি টমেটো – ২, বারি টমেটো – ৩ ইত্যাদি শীতকালীন এবং বিনা টমেটো – ৭, বারি টমেটো – ৪, বারি টমেটো – ৫ ইত্যাদি সারাবছরব্যাপী চাষ উপযোগী ।
বপনের সময়ঃ টমেটোর জাতভেদে বপনের সময় বিভিন্ন। সাধারণত রবি মৌসুমে জানুয়ারীতে বপন করা হয়।
চাষপদ্ধতি:মাটির প্রকার ভেদে ৪-৬ টি চাষ ও মই দিতে হবে । প্রথম চাষ গভীর হওয়া দরকার । বেড ও নালা পদ্ধতিতে গাজর চাষ করুন। এতে সেচ ও নিষ্কাশন সুবিধাজনক, পরিচর্যা সহজ, এবং সেচের পানির অপচয় কম হয় ।।সার শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে।সরাসরি বীজ বুনলে, লাইন থেকে লাইন ২০ ইঞ্চি এবং চারা থেকে চারা ২০ ইঞ্চি দূরে লাগাতে হবে ।
বীজের পরিমানঃ জাত ভেদে শতক প্রতি ০.৮১ গ্রাম।
সারব্যবস্থাপনাঃ শতক প্রতি পচা গোবর/কম্পোস্ট ৪০ কেজি, ইউরিয়া ১.২০ কেজি,টিএসপি ৮১০ গ্রাম ,এমওপি/পটাশ ৯৭০ গ্রাম প্রয়োগ করতে হবে । সমুদয় গোবর, টিএসপি ও ৩৬০ গ্রাম পটাশ সার জমি তৈরির আগে শেষ চাষে সময় মাটিতে প্রয়োগ করতে হবে। চারা রোপণের ১০ দিন পর ১ম বার ৪০০ গ্রাম করে ইউরিয়া, ২৫ দিন পর ২য় বার এবং ৪০ দিন পর তৃতীয় বারে যথাক্রমে ৪০০ গ্রাম করে ইউরিয়া এবং ২৮০ ও ২৪০ পটাশ সার উপরি প্রয়োগ করতেহবে।
পোকামাকড়ঃ
রোগবালাইঃ
সতর্কতাঃ বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যবহারের আগে বোতল বা প্যাকেটের গায়ের লেবেল ভালো করে পড়ুন এবং নির্দেশাবলি মেনে চলুন। ব্যবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুন।ব্যবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবেনা। বালাইনাশক ছিটানো জমির পানি যাতে মুক্ত জলাশয়ে না মেশে তা লক্ষ্য রাখুন। বালাইনাশক প্রয়োগ করা জমির ফসল কমপক্ষে সাত থেকে ১৫দিন পর বাজারজাত করুন।
আগাছাঃ আগাছা দমনের জন্য জমি চাষ ও মই দিয়ে ভালোভাবে আগাছা পরিষ্কার, বিশুদ্ধ বীজ ব্যবহার এবং পরিষ্কার কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার। ফসল বোনার ২৫-৩০দিনের মধ্যে আগাছা বাছাই করতে হবে।সেচ দেয়ার আগে আগাছা বাছাই করতে হবে।
সেচঃ চারা রোপণের ৩-৪ দিন পর পর্যন্ত হালকা সেচ ও পরে প্রতি কিস্তিতে সার উপরি প্রয়োগের পর জমিতে সেচ দিতে হয়। গ্রীষ্ম মৌসুমে টমেটো চাষের জন্য ঘন ঘন সেচের প্রয়োজন হয়। বর্ষা মৌসুমে তেমন একটা সেচের প্রয়োজন হয় না। টমেটো গাছ জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। সেচ দেওয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে, সেচের পানি কখনোই যেন বেডের উপর উঠে না আসে। নালাতে সেচ দিতে হবে, নালা থেকে শোষণের মাধ্যমে বেড ও গাছ পানি সংগ্রহ করতে হবে।
আবহাওয়া ও দুর্যোগঃ অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি নালা কেটে বের করে দিতে হবে ।
ফলনঃ জাতভেদে শতক প্রতি ফলন ১৪৫-৩৬০ কেজি।
সংরক্ষনঃ প্রাকৃতিক উপায়ে টমেটো সংরক্ষণের জন্য পাকা, আধা পাকা বা রঙ চড়া অবস্থায় টমেটো বোটাসহ গাছ থেকে খুবই সাবধানতার সাথে সংগ্রহ করতে হবে; যেন কোন অবস্থাতেই টমেটো থেকে বোটা আলাদা না হয়ে যায়। এছাড়া সতর্ক থাকতে হবে যেন টমেটোর গায়ে কোন ধরনের আঘাত না লাগে। গাছ থেকে টমেটো সংগ্রহ করার পর বাড়িতে এনে সেগুলোকে বাছাই করতে হবে। যেন কোন টমেটো পোকাযুক্ত ও গায়ে কোন দাগ না পড়ে। সংগ্রহ করা টমেটোর মধ্যে যদি এ ধরনের চিহ্ন যুক্ত কোন টমেটো থাকে তাহলে সেটা সংরক্ষণের জন্য বাছাই না করাই ভালো ভালো বলে তিনি জানান। কারণ এ দাগযুক্ত টমেটো খুব দ্রুত নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বাছাইকৃত টমেটোগুলো যে স্থানে সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে রাখা হবে সে জায়গা পরিস্কার করতে হবে। স্থান নির্বাচনের ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকতে হবে। এমন জায়গা নির্বাচন করতে হবে যেন সেটা শুষ্ক এবং পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা থাকে। সাধারণত পাকা ঘরের মেঝে বা শুকনা মাটির জায়গাগুলো সংরক্ষণ স্থান হিসেবে উপযুক্ত। ছায়াযুক্ত, ভেজা ও আলো বাতাসহীন জায়গা হলে টমেটো দ্রুত পচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার এমনভাবে টমেটোগুলো রাখতে হবে যাতে একটু ফাঁকা ফাঁকা থাকে। একটি টমেটো থেকে আরেকটি টমেটোর মধ্যে আলো বাতাস চলাচল করতে পারে।