এক নজরে চাল কুমড়া চাষ
উন্নত জাতঃ বারি চালকুমড়া-১, ইপসা চালকুমড়া-১, জুপিটার, হীরা ৪৫১ এফ-১।
পুষ্টিগুনঃ প্রতি ১০০ গ্রাম চালকুমড়ায় ৯৬.৫ গ্রাম জলীয় অংশ,০.৩ গ্রাম খনিজ পদার্থ, ০.৮ গ্রাম আঁশ, ১০ কিলোক্যালরি খাদ্য শক্তি, ০.৪ গ্রাম আমিষ, ১.০ গ্রাম চর্বি, ১.৬ গ্রাম শর্করা, ৩০ মিগ্রা ক্যালসিয়াম, ০.৮ মিগ্রা লৌহ, ১ মিগ্রা ভিটামিন-সি রয়েছে।
বপনের সময়ঃ ফেব্রু-মে (ফাল্গুন থেকে আশ্বিন) উপযুক্ত সময় ।
চাষপদ্ধতি: চারাগুলো রোপনের আগের দিন বিকালে পানি দিয়ে মাটি ভালোভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে। পরের দিন বিকালে চারা রোপন করতে হবে। মাদাগুলোর মাটি ভালোভাবে ওলট-পালট করে, এক কোপ দিয়ে চারা লাগানোর জন্য জায়গা করে নিতে হবে। চারার পলিব্যাগের ভাঁজ বরাবর ব্লেড দিয়ে কেটে পলিব্যাগ সরিয়ে মাটির দলাসহ চারাটি নির্দিষ্ট জায়গায় লাগিয়ে চারপাশে মাটি দিয়ে ভরাট করে দিতে হবে। চারা লাগানোর পর গর্তে পানি দিতে হবে। পলিব্যাগ সরানোর সময় এবং চারা রোপনের সময় সাবধানে থাকতে হবে যাতে মাটির দলা ভেঙ্গে চারার শিকড় ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। নতুবা শিকড়ের ক্ষতস্থান দিয়ে ঢলে পড়া রোগের জীবানু ঢুকবে এবং শিকড় ক্ষতিগ্রস্থ হলে গাছের বৃদ্ধি দেরীতে শুরু হবে।
বীজের পরিমানঃ জাত ভেদে শতক প্রতি ২.৫ - ৩ গ্রাম।
সার ব্যবস্থাপনাঃ
সারের নাম | শতকপ্রতিসার |
কম্পোস্ট | ৮০ কেজি |
ইউরিয়া | ৮০০ গ্রাম |
টিএসপি | ৭০০ গ্রাম |
পটাশ | ৬০০ গ্রাম |
জিপসাম | ৪০০ গ্রাম |
২০ কেজি গোবর, অর্ধেক টিএসপি ও ২০০ গ্রাম পটাশ, সমুদয় জিপসাম, দস্তা, বোরণ জমি তৈরির সময় মাটিতে প্রয়োগ করতে হবে। অবশিষ্ট গোবর (মাদা প্রতি ৫ কেজি), টিএসপি (মাদা প্রতি ৩০ গ্রাম), ২০০ গ্রাম পটাশ (মাদা প্রতি ২০ গ্রাম), সমুদয় ম্যাগনেসিয়াম (মাদা প্রতি ৫ গ্রাম) চারা রোপণের ৭-১০ দিন পূর্বে প্রয়োগ করতে হবে। চারা রোপণের ১০-১৫ দিন পর ১ম বার ২০০ গ্রাম ইউরিয়া এবং ২০০ গ্রাম পটাশ (মাদা প্রতি ১৫ গ্রাম), ৩০-৩৫ দিন পর ২য় বার, ৫০-৫৫ দিন পর ৩য় বার ২০০ গ্রাম করে ইউরিয়া (মাদা প্রতি ১৫ গ্রাম) প্রয়োগ করতে হবে। চারা রোপণের ৭০-৭৫ দিন পর ১০০ গ্রাম ইউরিয়া (মাদা প্রতি ১৫ গ্রাম) প্রয়োগ করতে হবে।
সেচঃ জমিতে যখনই রসের অভাব হবে তখনই সেচ দিতে হবে। চালকুমড়ার লতা বেশ রসালো ও নরম। তাই মাটি শুকিয়ে গেলে গাছ ঝিমিয়ে পড়ে এবং কচি ফল ও কুঁড়ি ঝরে যায়। শুষ্ক মৌসুমে ৫-৬ দিন পর পর সেচ দিতে হবে। প্রতিবার সেচের পর গাছের গোঁড়ার মাটি চটা বেঁধে গেলে চটা ভেঙে দিতে হবে। বৃষ্টির পর অতিরিক্ত পানি বের করে দিতে হবে।
আগাছাঃ জমি নিয়মিত জমি পর্যবেক্ষণ করুন । সেচ ও সার দেবার পর জো আসা মাত্র নিড়িয়ে আগাছা বাছাই। চারা গজানোর ২০-২৫ দিন পর আগাছা দমন করতে হবে। গাছ খুব ঘন থাকলে পাতলা করে দিতে হবে।চারা অবস্থা থেকে রসুন গঠনের পূর্ব পর্যন্ত ২ থেকে ৩ বার নিড়ানি দিয়ে জমির আগাছা পরিষ্কার করে দিতে হবে।
আবহাওয়া ও দুর্যোগঃ অতি বৃষ্টির কারনে জমিতে পানি বেশি জমে গেলে নালা তৈরি করে তাড়াতাড়ি পানি সরানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
পোকামাকড়ঃ
রোগবালাইঃ
সতর্কতাঃ বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যবহারের আগে বোতল বা প্যাকেটের গায়ের লেবেল ভালো করে পড়ুন এবং নির্দেশাবলি মেনে চলুন। ব্যবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুন। ব্যাবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবে না। বালাইনাশক ছিটানো জমির পানি যাতে মুক্ত জলাশয়ে না মেশে তা লক্ষ্য রাখুন। বালাইনাশক প্রয়োগ করা জমির ফসল কমপক্ষে সাত থেকে ১৫ দিন পর বাজারজাত করুন। বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যাবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুন। ব্যবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবে না।
ফলনঃ জাত ভেদে শতক প্রতি ফলন ১১০ – ১৩০ কেজি।
সংরক্ষনঃ ঠান্ডা ও বাতাস চলাচল করা জায়গাতে ফল ঘষা বা চাপ খায় না এমন ভাবে সংরক্ষণ করুন। বীজ বেশিদিন সংরক্ষণ করতে চাইলে নিমের তেল মিশিয়ে রাখতে পারেন। কিছুদিন পর পর বীজ হালকা রোদে শুকিয়ে নিবেন। মাটি ঝেড়ে পরিষ্কার করে নিতে হয়। এরপর ছায়ায় ৩-৪ দিন শুকিয়ে নিন। রোদে শুকালে রসুন নরম হয়ে যেতে পারে। তারপর কান্ড থেকে রসুন কেটে গুদামজাত করা হয়। শুকনো বীজ রসুন আলো বাতাস চলাচলযুক্ত ঘরের মাচায় বেনি করে ঝুলিয়ে রাখুন। এতে রসুন ভাল থাকে। বেশি পরিমাণ হলে শুকিয়ে ঠান্ডা করে চটের নেটের বস্তায় ভরে রাখুন। এছাড়া বেশি পরিমাণে শুকনো রসুন হিমাগারে ০-২ ডিগ্রি সে. তাপমাত্রায় শতকরা ৬০-৭০% আর্দ্রতায় বেশি দিন সংরক্ষণ করুন।