এক নজরে আদা চাষ
উন্নত জাতঃ বারি আদা-১ খরিফ মৌসুমে চাষ উপযোগী।
পুষ্টিগুনঃ ১০০ গ্রাম আদায় রয়েছেঃ এনার্জি-৮০ ক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট-১৭ গ্রাম, ফ্যাট-০.৭৫ গ্রাম, পটাশিয়াম-৪১৫ মিলিগ্রাম, ফসফরাস-৩৪ মিলিগ্রাম, আমিষ-২·৩%, শ্বেতসার ১২·৩%, আঁশ ২·৪%, খনিজ পদার্থ ১·২% এবং পানি ৮০·৮%। আদা মসলা হিসেবে খাওয়া ছাড়া ও রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ায়। সর্দিকাশি,আর্থারাইটিস, মাইগ্রেন, ডায়েরিয়া, গ্যাস, কনস্টিপেশন, হার্টের সমস্যা, ডায়বেটিস, হাই-কোলেস্টেরলের মতো বিবিধ রোগ প্রতিরোধে আদার জুড়ি নেই।
বপনের সময়ঃ বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য (এপ্রিল- মে) বপনের উপযুক্ত সময়।
চাষপদ্ধতি: পানি নিকাশের ভাল ব্যবস্থা আছে এমন উঁচু ও মাঝারী উঁচু জমি এবং বেলে দো-আঁশ থেকে দো-আঁশ মাটিতে ৪-৬ টি চাষ ও মই দিতে হবে। প্রথম চাষ গভীর হওয়া দরকার। লাইন থেকে লাইন ২০ইঞ্চি এবং চারা থেকে চারা ১০ ইঞ্চি দূরে লাগাতে হবে ।
বীজের পরিমানঃ ৭.৫-৮ কেজি। ৩০-৪০ গ্রাম ওজনের ২.৫-৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের দুই চোখ বিশিষ্ট কন্দ খণ্ড।
সার ব্যবস্থাপনাঃ
সারের নাম | শতক প্রতি সার | হেক্টর প্রতি সার |
কম্পোস্ট | ২০-৪০ কেজি | ১০ টন |
ইউরিয়া | ১.২ কেজি | ৩০০ কেজি |
টিএসপি | ১.১ কেজি | ২৭০ কেজি |
পটাশ | ১ কেজি | ২৩০ কেজি |
জিপসাম | ৫০০ গ্রাম | ১১০ কেজি |
দস্তা | ১০০ গ্রাম | ২.৫ কেজি। |
সম্পূর্ণ গোবর এবং টিএসপি, জিপসাম, দস্তা এবং অর্ধেক এমওপি (পটাশ) ও সকল সার শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। অর্ধেক ইউরিয়া ও বাকী পটাশের অর্ধেক ৫০ দিন পর প্রয়োগ করতে হবে। অবশিষ্ট ইউরিয়া ও পটাশ ৮০ দিন ও ১০০ দিন পর সমান দুই কিস্তিতে উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
সেচঃ আদা লাগানোর পর বৃষ্টি হলে সেচের প্রয়োজন হয় না। তবে বৃষ্টি না হলে ও মাটিতে রসের অভাব থাকলে নালাতে সেচ দিতে হবে এবং ২-৩ ঘন্টা পর নালার অতিরিক্ত পানি বের করে দিন। বৃষ্টির পানি যেন জমতে না পারে সেজন্য পানি নিকাশের ব্যবস্থা রাখুন।
আগাছাঃ সেচ ও সার দেবার পর জো আসা মাত্র আগাছা দমন করুন। চারা গজানোর ২০-২৫ দিন পর আগাছা দমন করতে হবে। গাছ খুব ঘন থাকলে পাতলা করে দিতে হবে। প্রতি বর্গমিটারে রবি মৌসুমে ৫০-৬০ টি এবং খরিফ মৌসুমে ৪০-৫০ টি চারা রাখা উত্তম।
আবহাওয়া ও দুর্যোগঃ সারিতে বুনোট হবে, যাতে জমির অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি বের করার নালা রাখুন। বাত্তি ফসল তুলে ফেলতে হবে। তাড়াতাড়ি অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি বের করার ব্যবস্থা করুন।
পোকামাকড়ঃ
রোগবালাইঃ
সতর্কতাঃ বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যবহারের আগে বোতল বা প্যাকেটের গায়ের লেবেল ভালো করে পড়ুন এবং নির্দেশাবলি মেনে চলুন। ব্যবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুন। ব্যবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবেনা। বালাইনাশক ছিটানো জমির পানি যাতে মুক্ত জলাশয়ে না মেশে তা লক্ষ্য রাখুন। বালাইনাশক প্রয়োগ করা জমির ফসল কমপক্ষে সাত থেকে ১৫দিন পর বাজারজাত করুন।
ফলনঃ জাতভেদে শতক প্রতি ফলন ১১২-১২০ কেজি।
সংরক্ষনঃ আদা উঠানোর পর বড় আকারের বীজ কন্দ ছায়াযুক্ত স্থানে বা ঘরের মেঝেতে বা মাটির নিচে গর্ত করে গর্তের নিচে বালির ৫ সেমি/ ২ ইঞ্চি পুরু স্তর করে তার উপর আদা রাখার পর বালি দিয়ে ঢেকে দিন। পরে খড় বিছিয়ে দিয়ে ঢেকে দিন। এতে আদার গুনাগুন এবং ওজন ভাল থাকে। গর্তে সংরক্ষণ করার পূর্বে বীজ আদা ০.১% কুইনালফস এবং ০.৩ % ডায়াথেন এম-৪৫ এর দ্রবণে শোধন করুন। উক্ত দ্রবণ থেকে উঠিয়ে কন্দ ছায়ায় শুকিয়ে নিন। গর্তের দেওয়ালের চারিদিকে গোবরের তৈরী পেস্ট দিয়ে প্রলেপ দিয়ে শুকিয়ে আদা রাখুন। আদার প্রতি স্তরের উপর ২ সেমি. পুরু শুকনো বালি বা করাতের গুড়া দিয়ে ঢেকে দিন। বায়ু চলাচলের জন্য গর্তের উপরিভাগে ও পাশে পর্যাপ্ত পরিমাণ ফাঁকা জায়গা রাখুন।